গাব ফলের উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা ২০টি

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্য। যার মধ্যে আপনি গর্ভাবস্থায় গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

তাছাড়াও দেশি গাব গাছ,গর্ভাবস্থায় গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা, গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা, গাব ফল খাওয়ার অপকারিতা, গাব ফলের ইংরেজি নাম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। 

সূচিপত্র 

 গাব ফলের উপকারিতা

গাব আমাদের অতি পরিচিত একটি দেশীয় ফল। এটি সুস্বাদু, মিষ্টি এবং কোষমুক্ত ফল। গাব ফল দেখতে অনেক সাধারণ হলেও পুষ্টিগুণে আর স্বাদে মোটেও সাধারণ নয়। বরং অন্যান্য দামি ফলের চেয়ে এতে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি রয়েছে। 

  • শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে গাব ফল ভীষণ উপকারী। এই ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য শক্তি বা এনার্জি ও আমিষ। অল্প পরিমাণে গাব খেলেই আমাদের শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়। এছাড়াও এতে থাকা পটাশিয়াম আমাদের রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং। তাই যারা নিম্ন রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা গব ফল খেতে পারেন। 
  • গাবে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। আর এতে আমাদের হৃদযন্ত্রের কার্যকারীতা অনেক বেড়ে যায়। হার্ট ডিজেসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এছাড়াও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমার শরীরের বেড়ে ক্যান্সার কোষ বেড়ে উঠতে দেয় না। আর এর ফলে ক্যান্সারের মত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়।
  • গাবে আছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সালফার, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মত বেশ কিছু উপকারী উপাদান। যা আমাদের চোখের জন্য অত্যান্ত উপকারী। তাই প্রতিদিন অল্প করে এ ফল খেলে আমাদের দৃষ্টিশক্তির অনেক উন্নতি হয় এবং একই সাথে রাতকানা রোগ থেকে চিরতরে রেহাই পাওয়া যায়। এছাড়াও চোখের এলার্জিসহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমাতে এটব অনেক কার্যকরী। 
  • সবাই এখন অতিরিক্ত ওজন কমাতে ব্যস্ত। আর এই সমস্যা সমাধানে গাব ফল বেশ কার্যকরী। গাব অতিরিক্ত ওজন কমাতে খুব ভাল কাজ করে। এছাড়াও গাবে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আশ থাকায় এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারীতা বৃদ্ধি করে হজম শক্তি বাড়ায়। ফলে গ্যাস বা পেটের সমস্যা কমে যায়।
  • গাবে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় এটি খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর এর ফলে আমরা বিভিন্ন রকম সিজিনাল অসুখ থেকে মুক্তি পাই। এছাড়াও গাব খেলে পুরাতন আমাশয়, একজিমা কিংবা বিভিন্ন চর্মরোগ থেকে মুক্তি মেলে। 
গাবের এসব পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরকে রক্ষা করে নানা রোগ থেকে। ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য কাঁচা ও পাকা গাব উপকারী। সুস্বাদু গাবের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ডায়বেটিস, হৃদরোগ থেকে শুরু করে নানা অসুখ থেকে মুক্তি মিলবে।

গাব ফল খাওয়ার নিয়ম 

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল যার মধ্যে এখন আমরা আলোচনা করব গাব ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাই সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। 

আমাদের দেশে প্রচুর গাছ রয়েছে। গ্রামে এক সময় সর্বত্তই গাব মিলতো। তেমন অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছিল না এই ফলের। কিন্তু আজকাল শহর এলাকায় ফেরিওয়ালার ভ্যানে করে গাব বিক্রি করেন। আবার অনেক অভিজাত ফলের দোকানেও গাব পাওয়া যায়। আর স্বাদে অতুলনীয় গাবের চাহিদক দিন দিন বাড়ছে। স্বাদ ও পুষ্টির কথা বিবেচনা করে মৌসুমি এই ফল খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন সবাই৷ 

গর্ভাবস্থায় গাব খাওয়ার উপকারিতা 

গাবের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় গাব খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা :

শারীরিক দুর্বলতা কমায় : উচ্চমাত্রায় খাদ্যশক্তি থাকায় গাব শারীরিক দুর্বলতা কমায়। গাবে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত করে। রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে গাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : গাবে প্রচুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ রয়েছে। এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি, ত্বকের জন্য ক্ষতিকর রেডিক্যাল কমিয়ে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই দুই ভিটামিন বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। জটিল রোগ প্রতিরোধ করে এবং ত্বকের সুস্থতার জন্য বেশ কার্যকরী। 

রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটায় : গাবে থাকা আয়রন লোহিত কণিকার কোষের উন্নতি ঘটায়। দেহের গুরুত্বপূর্ণ টিস্যুগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এছাড়া এটি পেশি গঠণ, চুলের বৃদ্ধি এবং হজমশক্তির উন্নতি করে।

হাইপারটেনশন কমায় : উচ্চ পটাশিয়াম উপাদান থাকায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। গাব শরীরে রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে, কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের উপর চাপ কমায় এমনকি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। 

হজমে সমস্যা : গাবে প্রচুর আশ থাকার কারণে গাব হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। 

ত্বকের যত্ন : গাব খেলে বা এর তৈরি রূপচর্চা উপাদান ব্যবহার করলে ত্বকের প্রদাহ কমায়। গাব খেলে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বুকে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। 

এতে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার উন্নতি হয়। আমাশয় ও পেটের অসুখে গাব গাছের ছাল বেশ উপকারী। 

দেশি গাব গাছ

দেশি গাব আকারে ছোট হয় এবং কাঁচা ফলের কষ ব্যবহার করে জাল বা চামড়া ট্যানিং করা হয়। পাকা ফলও খাওয়া যায়। তবে বিলাতি গাবের চেয়ে কষযুক্ত হতে পারে। এটিকে Gaub, Indian Persimmon, Malabar Ebony ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। 

গাব গাছ সাধারণত মাঝারি আকারের চিরসবুজ বৃক্ষ হয়ে থাকে। এর পাতা লম্বা ও চকচকে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে ফুল আসে এবং আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ফল পাকে। 

দেশি গাব গাছ বহুববর্ষজীবী। এটি খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে।গাব গাছ ৩০-৩৫ মিটার লম্বা আর ৬৫-৭০ সেন্টিমিটার ব্যাসের হযে থাকে। দেশি গাবের ফল গোলাকার। খেতে হালকা মিষ্টি  কষযুক্ত। 

গাব খাওয়ার অপকারিতা 

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল যার মধ্যে এখন আমরা আলোচনা করব গাব ফল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাই সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। 

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আমারা আগে আলোচনা করছি। গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো না। তেমনি অতিরিক্ত গাব ফল খাওয়া ভালো না স্বাস্থ্যের জন্য। 

কারণ গাব মিষ্টি জাতীয় ফল। অতিরিক্ত মিষ্টি শরীরের জন্য ভালো না। তাই নিয়মিত গাব ফল খাওয়া উচিত। যা আমাদের শরীরের জন্য ভালো হবে। দিনে ১-২ টা পাকা গাব ফল খেতে পারেন। আর কাঁচা গাব ফল হলে আরও অনেক বেশি খেতে পারেন। 

গাব ফল english name

গাব বা বিলাতি গাব একটি ফল। গাব গাছের বৈগানিক নাম Diospyros discolor বা Diospyros blancoi যা Ebenaceae পরিবারভুক্ত। এটি সুস্বাদু ও মিষ্টি ফল। যদিও একে বিলাতি গাব বলা হয়, এর আদি নিবাস ফিলিপাইন। 

গাব ফল এর ইংরেজি নাম : Gob fruit 

গাব ফল গাছ

গাব ফলের উপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল যার মধ্যে এখন আমরা আলোচনা করব গাব ফল গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাই সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। 

গাব গাছ সর্বোচ্চ ৩৫ মিটার লম্বা হতে পারে। এর কান্ড কালচে, যার ব্যাস ৭০ সে.মি. পর্যন্ত হতে পারে। গাব পাকলে এর রঙ হয় গাঢ় লাল। খোসার উপরটা মখমলের মত। ফলের ভেতরটা নরম, ক্রিমের মতো সাদা বা গোলাপি শাস যুক্ত। 

স্বাদ এবং সুগন্ধ অনেকটা একটি পীচের মতো। আপেলের আকারের এই ফলগুলো গোলাকার হয়। প্রায় ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা এবং ওজনে ১০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এটি বহুল পরিমাণে বাজারজাত করা হয় এবং জনপ্রিয় একটি ফল। 

গাব গাছ সমার্থন শব্দ 

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল যার মধ্যে এখন আমরা আলোচনা করব গাব গাছ সমার্থন শব্দ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাই সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। 

গ্রামে ঝোপ-ঝাড়ে যে গাছটিকে ভয় ভূত-পিশাচারে চেয়ে কম নয় এর নাম দেশি গাব। বহু বর্য়জীবী দেশি গাব বাংলা ও হিন্দিতে গাব, সংস্কৃত ভাষায় এর নাম তিন্দুকা এবং তামিল ভাষায় তুম্বিকা নামে পরিচিত। 

দেশি গাবের আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া। বিলাতি গাব নামে অন্য একটি ফল রয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক প্রজাতি। 

লেখকের মন্তব্য :

গাব ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার মধ্যে আমরা গাব ফল খাওয়ার অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় গাব ফল খাওয়ার উপকারিতা, গাব ফল খাওয়ার নিয়ম, গাব ফলে ইংরেজি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। 

আমাদের আজকের আলোচনা ছাড়া কোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া চেষ্টা করব। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url