শিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা-শিম চাষ পদ্ধতি ২০২৫
শিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ুন। শিম আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে থাকে এবং শীতে নিয়মিত শিম খেলে ত্বক সুন্দর হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক শিমের উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে।
শীতকালীন সবজি হিসেবে শিমের কদর বেশি। শিম আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে থাকে। শিমে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে যা, আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। নিচে শিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সূচিপত্র
ভূমিকা
বাংলাদেশের একটি শীতকালীন জনপ্রিয় সবজির নাম হলো শিম। শিমে আছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি। শিম সবার জনপ্রিয় সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর সবজি। কচি শিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও স্বেতশ্বার। শিম আমাদের দেহ ঠান্ডা রাখার জন্য সাহায্য করে। শিমের উপকারীতা ও অপকারীতা অনেক৷ শিম আমার ভাজি, ভর্তা এবং মাছ দিয়ে রান্না করে খেতে পারি।
তাছাড়া শিমের ভাজির চলিত বেশি রয়েছে। শীতের সবজি শিম শরীরের নানা উপকার করে। পুষ্টিবিদদের মতে, শিমে অনেক ধরনের খনিজ পদার্থ রয়েছে। শিমে আয়রন, ফাইভার, ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়। শিমের বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। যারা প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছ, মাংস খান না তারা নিয়মিত শিম খেতে পারেন। শীতে নিয়মিত খেলে ত্বক ভালো থাকে। শিম খেলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শিমে প্রচুর পরিমাণ খনিজ থাকার কারণে চুল পড়ার সমস্যা সমাধান করতে পারে।
শিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা
শিমে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শিমে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকে। এ কারণে এ সবজি ত্বকের আদ্রতা দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের রক্তে কোলেস্টেরল ও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। শিমে থাকা নানা উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
নিয়মিত শিম খেলে পাবেন অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। শিম খেলে পাবেন স্বাস্থ্যের উপকার হবে।শিমে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে। তবে এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, জিংক, মিনারেল। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পরিপাকের জন্য খুব দরকারি এই শিম।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ডায়েটারি ফাইবার তাই কোষ্ঠকাঠিন্য আক্রমণ হওয়া রোগীদের জন্য শিম খুবই উপকারী। শিম খাওয়ার উপকারিতা অনেক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শিম খাওয়া ক্ষতিকর দিক
সবার আগে জানবো শিম খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। শিমে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। তবে এতে থাকা প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, জিংক ও মিনারেল শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শিম খেলে একদিকে যেমন ওজন বৃদ্ধির ভয় নাই, অন্যদিকে শরীরও সুস্থ থাকবে। শিম খাওয়ার ক্ষতিকর দিক হলো শিম খেয়ে ফেলার ফলে যেকোনো সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এ সবজিতে আছে সামান্য কিছু ক্ষতিকর দিক।
শিমে আছে কিছু সামান্য পরিমাণে ক্ষতিকর সায়োজনিক গ্লুকোসাইড। পুষ্টিসমৃদ্ধ হলেও বেশি পরিমাণে শিম খেলে বমিবমি ভাব হতে পারে। পরিমাণে অতিরিক্ত শিম খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। শিম বেশি খাওয়া ফলে আপনার পেটে গ্যাস হতে পারে, বিশেষ করে যাদের কিডনির সমস্যা আছে এবং এলার্জি আছে।
তারা কখনোই অতিরিক্ত শিম খাবেন না৷ অতিরিক্ত শিম খেলে আপনার কফ বেড়ে যেতে পারে, আপনার যদি বাতের ব্যথা থাকে তাহলে সেটাও বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে, অতিরিক্ত শিম খেলে আপনার রুচি ও কমে যাবে।
শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান
শিমের বিচি এক ধরনের আমিষ। শিমের বিচিতে খাদ্য উপাদান রয়েছে তা হলো খাদ্যশক্তি ৩৪৭ কিলো ক্যালরি। এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। শিম, শিমের বিচি এবং শিমের পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া হয়। শিমের বিচিতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার। যা শরীরের জন্য খুবই প্রযোজনীয়। এনার্জি বা শক্তির জন্য শিমে রয়েছে শতকরা ২০ ভাগ প্রোটিন ও উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট। প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও আয়রন।
শিমের বিচি দেহের বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের মাত্রা ও অতিরিক্ত ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে কোলেস্টেরল একেবারেই নেই। হজমে সহায়তা করে দেহে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের মাত্রা ঠিক রাখে৷ গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। শিমের বিচি শরীরে আমিষের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
শিমের বিচির অপকারীতা
শিমের বিচির অপকারীতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ুন। শর্করা ও চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস বশে রাখার ক্ষমতা আছে। চুল পড়া কমায় প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ থাকায় শিমের মতো শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এতে উচ্চ মানের ফাইবার প্রোটিন রয়েছে। যেটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
- বাড়ন্ত বয়সে প্রোটিনের অভাবে দেহ সুগঠিত হয় না অর্থাৎ উচ্চতা কম হয়, দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
- দেহের ক্ষয়পূরণ হয় না।
- হাড়ের গঠণ মজবুত হয় না। ফলে কর্মক্ষমতা কমে যায়।
- হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় এবং দেহ দুর্বল হয়ে পড়ে।
শিম চাষ পদ্ধতি ২০২৫
এবার আমরা জানবো শিম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে। শিম গাছ ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা হলে মাদার গাছের গোড়ার পাশে বাঁশের ডগা মাটিতে পুঁতে বাউনির ব্যবস্থা করতে হবে।চারার বয়স ৪০-৪৫ হলে শিমের ডগা পরস্পর প্যাচ লেগে যায়। বীজ বপনের আগে ১০-১২ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটি মাদায় ২-৩ টি করে সুস্থ চারা রেখে বাকি চারাগুলো তুলে ফেলতে হবে। সারা বছর চাষ করা শিম। শিম চাষ করার জন্য দো আশ ও বেলে দো আশ মাটি সবচেয়ে ভালো। তবে সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায় শিম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।
শিম চাষের আধুনিক পদ্ধতিতে জমি নির্বাচন, দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে শিম ভালো হয়। আমিষসমৃদ্ধ এই শিম তরকারি হিসেবে কাজ করে। জমি ছাড়া রাস্তার ধারে, পথের আলে, ঘরের চালে লাগানো হয়। শিম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম
- শিমের বিচি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- প্রতিদিন ১ কাপ থেকে ১.৫ কাপ শিমের বিচি খাওয়া যেতে পারে। তবে নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়া পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
- শিমের বিচি রান্না করার সময় পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, মরিচ গুঁড়ো ইত্যাদি মশলা ব্যবহার করে স্বাদ বৃদ্ধি করতে হবে।
- শিমের বিচি যে কোনো সময় খাওয়া যায়, তবে সাধারণত দুপুর বা রাতের খাবারে যুক্ত করা ভালো।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url