হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা ১০টি
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা
হাতিশুঁড় গাছের শিকড়ের উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। হাতিশুঁড় গাছ প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধি গাছ। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাতিশুঁড় গাছের শিকড় , পাতা এবং অন্যান্য অংশ বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা :
প্রদাহ কমানো : হাতিশুঁড় গাছের শিকড়ের অ্যান্টি ইনফ্লেমেরি গুণ রয়েছে যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এর শিকড়ের রস বা গুঁড়া সাধারণত প্রলেপ বা পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করা হয়।
পেটের সমস্যা : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় পেটের সমস্যা দূর করতে পারেন। এটি গ্যাস, বদহজম, অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এর শিকড়ের রস হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
ডিটক্সিফিকেশন : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে পারেন। এটি শরীরের ভিতর থেকে টক্সিনগুলো বের করে শরীরকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এর শিকড়ের অ্যান্টি স্পাসমোডিক গুণ রয়েছে যা পেটের শিথিলতা এবং স্বাভাবিক শোষণ ক্ষমতা ফিরিয়ে আনে। এটি অন্তের কাজ সুষ্ঠু করতে সহায়তা করে।
ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। শিকড়ের রস ত্বকে প্রয়োগ করা যেতে পারে বা গাছের শিকড়ের গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে পেস্ট করে ত্বকে লাগানো যেতে পারে।
মনোরোগ ও অবসাদ : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কিছু পরিমাণে মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করতে পারে। মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। ডিপ্রেশন দূর করতে কার্যকরী হতে পারে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : হাতিশুঁড় গাছের শিকড় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করর। ফলে এটি বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে।
হাতিশুড় গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার পরবর্তী অংশে আমরা হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়। বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন।
হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়
হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কোমরে বাঁধা হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা প্রভাব দেখা দিতে পারে যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, বিশেষ কোনো গাছের শিকড় বা প্রাকৃতিক উপাদান শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরফলে ব্যথা, অস্বস্তি বা বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দূর হয়।
আবার কিছু সংস্কৃতিতে হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কোমরে বাঁধার একটি ভিন্ন আধ্যাত্নিক বা প্রাকৃতিক গুরুত্ব রয়েছে। যদিও এর আধ্যানত্নিক প্রভাব থাকতে পারে। তবুও শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাই সর্বমোট বিবেচনায় হাতিশুঁড় গাছের শিকড় কোমরে বাঁধা উচিত নয়।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার পরবর্তী অংশে আমরা আলোচনা করব মান্দার গাছের শিকড় খেলে কি হয় । বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন।
মান্দার গাছের শিকড় খেলে কি হয়
মান্দার গাছের শিকড় খেলে সাধারণত তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায় না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতে পারে। তাই বেশি পরবমাণে কেলে বমি, পেট খারাপ কিংবা ডায়রিয়া হতে পারে।
- মান্দার গাছের শিকড় বিভিন্ন রোগের উপশমে ব্যবহৃত হয়। প্লীহা, দাদ, শোথ, অর্শ, ক্রিমি ও শ্বাসকষ্টের জন্য উপর এই গাছ।
- এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং পেটের সমস্যা দূর করে।
- মান্দার গাছের শিকড় ব্যবহার করে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরি করা হয়।
- মান্দার গাছের পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
হাতি সুরের গাছের শিকড় খেলে কি হয়
হাতিশুঁড় গাছের শিকড় খেলে আমাদের অনেক উপকার হয় সেব্যাপারে জানবো৷ এই গাছের শিকড় অনেক রোগ প্রতিরোধের সহায়তা করে। দাঁতের মাড়িতে ফোলা থাকলে এগাছের শিকার চিবিয়ে খেলে ফোলা ভালো হয়।
যাদের যৌনদুর্বলতা রয়েছে তারা সকালে খালি পেটে পানের সাথে মধু এবং এক ইঞ্চি পরিমাণ শিকড়ের রস খাওয়া ফলে আপনার যৌন সমস্যা দূর হবে। আপনার সঙ্গিনী আপনার কাছে সুখী হবে।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার পরবর্তী অংশে আমরা হাতিশুর গাছ খেলে কি হয়। বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন।
হাতিশুর গাছ খেলে কি হয়
হাতিশুঁড় গাছের পাতার রস রেড়ির তেলের সঙ্গে মিশিয়ে রাখলে বিষাক্ত পোকার কামড়ে ব্যবহার করলে ভালো হয়। টাইফয়েড জ্বরে পাতার রস ছেকে খেলে ভালো হয়। কোথাও একজিমা, দাদ, ছোয়াইসিস হলে এই পাতা থেতিয়ে লাগিয়ে দিলে ভালো হবে।
আঘাত জনিত ফলায় এপাতার রস ব্যবহার করলে ফোলা কমে যায়। ব্রণ হলে এই গাছের কচি অংশ থেকে গোসলের এক ঘন্টা আগে ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হবে।অনেকের গায়ে ঘা ভালো করে৷
দাঁতের মাড়ি ফোলা রোগের জন্য এই গাছের পাতা থেতিয়ে লাগিয়ে দিন ভালো হয়ে যাবে। যাদের ঘনঘন সর্দি বা কাশি হয় তারা এ গাছের পাতা ও কান্ড থেকে রস করে নিতে হবে।
প্রত্যয় সকাল বিকাল দুই চামচ করে রস খেতে হবে আশা করা যায় ভালো হয়ে যাবে। হাতিশুঁড় গাছ সূর্য আলোর সাথে সালোকসংশ্লেষণ এর মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিবেশ মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে বায়ুমন্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সইড এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
হাতির সুর গাছের ছবি
হাতিশুঁড় গাছ নরম তাই এগুলো তাড়াতাড়ি পচে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। হাতিশুঁড়ের পাতা ফুল ফল শিকড় সবগুলো ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পরিপূর্ণ হাতিশুঁড় গাছের নিচে বিভিন্ন পানি আবাসস্থল তৈরি করে।
হাতিশুঁড় গাছ বাংলাদেশে সাধারণত চৈত্র থেকে জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত বেশি দেখা যায়। এই গাছটি সাধারণত আগাছার সঙ্গে জন্মায় তাই সবাই আগাছার সঙ্গে গাছগুলো নিধন করে ফেলে। এই গাছের মাথায় সাদা ফুল ফোটে৷ এই ফুলগুলো দেখতে হাতির দাঁতের মতো।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার পরবর্তী অংশে আমরা আলোচনা করব লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে । বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন।
লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা
লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন। লজ্জাবতী গাছ কেউ ওষুধি গুণাগুণ সম্পূর্ণ কাজ হিসেবে বলা হয়। চলুন লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাব :
পাচনতন্ত্রের উন্নতি : লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের রস খাওয়ার ফলে পেটের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়। যেমন: বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।
ব্যথা উপশম : লজ্জাবতী গাছের শিকড় খাওয়ার ফলে শরীরে যে কোন ধরনের বঢথা দূর করা সম্ভব হয় কিংবা কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।
প্রতিকূলতা কমাই : লজ্জাবতী গাছের শিকড় খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে যেকোন ধরনের জীবাণুজনিত রোগ কিংবা মৌসুমী রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মাথা ব্যথা কমানো : যাদের মাইগ্রেন জনিত সমস্যা রয়েছে বা যারা মাথা ব্যথায় ভুগছেন তারা চাইলে লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের রস খেতে পারেন এতে করে আপনার উপকারিতা পাবেন।
যৌন শক্তি বৃদ্ধি : পুরুষ দেহের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা রয়েছে অনেক। পুরুষ দেহে দুর্বলতা কিংবা যৌন ক্ষেত্রে অক্ষমতা, শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
কিডনির সমস্যা : লজ্জাবতী গাছের শিকড় খাওয়ার ফলে কিডনির সমস্যা দূর হয়। মূত্রবন্ধ হিসেবে কাজ করে লজ্জাবতী গাছের শিকড়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের রস খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মানসিক চাপ কমে : লজ্জাবতী গাছের পাতার রস খাওয়ার ফলে কিংবা শিকড়ের রস খাওয়ার ফলে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার পরবর্তী অংশে আমরা হাতিশুর গাছের মূল খাওয়ার নিয়ম । বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্ট পড়ুন।
হাতিশুর গাছের মূল খাওয়ার নিয়ম
প্রথমে আপনাকে একটি হাতিশুঁড় গাছ সংগ্রহ করে নিতে হবে। গাছটি সংগ্রহ করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে গাছটি যেন বয়স্ক হয়। এটি বোঝার জন্য যে সকল গাছের ফুল হয়নি সে গাছ নিতে হবে।
সেগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন। একটি হাতিশুঁড় গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সর্বনিম্ন তিন মাস সময় লাগে। তারপর সংগ্রহ করে আনার পর এর মূল ভালোভাবে পরিষ্কার করে কেটে নিতে হবে। এই ওষুধটি বানানোর জন্য আপনার মোট চারটি উপাদান লাগবে।
একটি হলো হাতিশুঁড় গাছের মূল, দ্বিতীয়টি হলো খাঁটি মধু, তৃতীয়টি হলো কাঁচা পরিপক্ব পান এবং একটু কালোজিরা৷ সর্বপ্রথম সবগুলো পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর একটা পান নিয়ে সেখানে হাতিশুঁড় গাছের মূল ১ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে নিন। তারপর এক চিমটি কালোজিরা দিয়ে সাধ মতো মধু নিবেন।
বাজারে যেমন একটি পান বিক্রি হয় সেভাবে এই পানটি বানিয়ে নিতে হবে। তারপর খেতে পারেন। এই নিয়মের ব্যতিক্রম হলে আপনার চলাচল করতে সমস্যা হতে পারে। কেননা এটি মানবদেহের অনেক বড় পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। যার মধ্যে আমরা হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়, হাতিশুর গাছের মূল খাওয়ার নিয়ম, লজ্জাবতী গাছের শিকড় খাওয়ার উপকারিতা, হাতির সুর গাছের ছবি, হাতিশুর গাছ খেলে কি হয় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের আজকের আলোচনা ছাড়া কোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url